শরীরের রং ফর্সা করার উপায় কি.............????

শরীরের রং ফর্সা করার উপায় কি



লিপ্তি  (ছদ্দনাম) বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা শেষ করেছে। একটা ভালো চাকুরিতেও জয়েন করেছে। পরিবার থেকে তার বিয়ের জন্য পাত্র দেখা হচ্ছে। বেশ ভালো ভালো সম্বন্ধ আসে কিন্তু বিয়ে হচ্ছে না। এ নিয়ে লিপ্তি মা দুঃখে একদিন বলেই ফেললেন, মেয়েটা যদি একটু ফর্সা হত এবং রং ফর্সা করার উপায় কি তা জানতাম! এটা শুনে হয়ত আমাদের খারাপ লাগতে পারে।

কিন্তু আমরা যতই বলি, আসলে বেশিরভাগ মানুষই নিজের শরীরের রং নিয়ে সন্তুষ্ট নই। অনেকেই রং-টা আরেকটু হালকা করতে, মানে ফর্সা করতে অনেক কিচু করে থাকি ? যাষ্ট অনেকগুলো টাকা খরচ হয়। ফালাফল শূন্য। যদিও এতে করে সাময়িক কিছু ফল হয়তো পাওয়া যায়, কিন্তু কিছু দিন পরই সঠিক যত্নের অভাবে ত্বক আগের চেয়েও অনেক সময় খারাপ হয়ে যায়। তাহলে কী কোনো ভাবেই নিজের ত্বকের রং কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে ফর্সা করা সম্ভব নয়?

চিন্তা করবেন না, অসম্ভব নয়, বরং খুব সহজেই সম্ভব। আর এজন্য আমাদের খুব বেশি দৌড়ঝাপও করতে হবে না। শুধুমাত্র ঘরের ফ্রিজেই রয়েছে আমাদের ফর্সা হওয়ার উপকরণ। তাও আবার মুখে-হাতে মেখে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হবে না, শুধু খেলেই হবে। বিশ্বাস হচ্ছে না তো, আসুন জানি বিস্তারিত।

ত্বকের রং প্লাসে যাবে না মাইনাসে তা নির্ভর করে আসলে আমাদের খাদ্য তালিকার ওপরই। বেশি ফাইবার, মিনারেল, ভিটামিন এবং পরিমাণমতো ফ্যাট ও প্রোটিনযুক্ত খাবার অনায়াসেই ত্বকের রং কয়েক শেড উন্নত করে তোলে। আর এজন্য প্রতিদিনের খাবারে বেশি করে ফল এবং সবজি রাখুন।

অনেক সময় আমরা সবজি-ফলের পরিবর্তে জাঙ্ক ফুড (ফাস্ট ফুড) খেতে বেশি পছন্দ করি। কিন্তু ত্বক ভালো রাখতে চাইলে এই অভ্যাস থেকে পিছু হাটতে হবে

দিনের প্রতি বেলার খাবারে অবশ্যই অবশ্যই এক বাটি সবজি রাখতে হবে। সঙ্গে অল্প ভাত বা রুটি, ডাল, মাছ বা মাংস রাখতে পারেন। আর প্রতিদিন যে কোনো একটি ফল বাধ্যতামূলক খেতেই হবে।

বন্ধুরা, সবজির মধ্যে পালং শাক, টমেটো, বরবটি, মিষ্টি ‍আলু এবং করলা আমাদের রং ফর্সা করতে বেশ অবদান রাখে। 

ডেইরি প্রডাক্টের মধ্যে দুধ, চিজ়, টক দই, আর প্রোটিনের মধ্যে ডিম, মাছ, মাংস খেতে হবে নিয়মিত।

আপেল, কমলা, কলা, পেঁপে, আঙুর, স্ট্রবেরি, আম, বরই আর তরমুজ মানে ফলের ঝুড়িতে রাখা সবক’টা ফলই ত্বকের জন্য উপকারী। কারণ ফল থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণ ফাইবার, ভিটামিন এবং মিনারেল পায় আমাদের ত্বক।

ডার্ক চকলেট খেতে বলছি, অবাক হচ্ছেন? আসলে চকলেক আমাদের ত্বকের আদ্রতা ধরে রাখে। সেই সঙ্গে রোদে পোড়া ত্বকের ড্যামেজ সারাতেও সাহায্য করে।

তবে মনে রাখতে হবে, খাবারের সঙ্গে সঙ্গে দেহ ও মন সুস্থ রাখতে হবে, থাকতে হবে একদম ফিট আর দুশ্চিন্তামুক্ত। নিয়মিত ত্বক পরিষ্কার, ব্যায়াম ‍আর প্রচুর পানি পান এগুলো তো আমরা এমনিতেই করি।

বন্ধুরা, নিয়মিত এগুলো মেনে চলুন রং-ফর্সাকারী ক্রিমগুলোর বাজে অভ্যাস দুরে পালিয়ে যাবে।

ফর্সা হওয়ার সহজ উপায় 

1.  বেসন, লেবুর রস ও কাঠবাদাম একসাথে পেস্ট করে ১০ মিনিট মুখে লাগিয়ে রাখুন। তারপর ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ পরিষ্কার করে ফেলুন। বেসন ও লেবুর রস মুখের মৃত কোষ, কালোদাগ দুর করতে সহায়তা করে। কাজু বাদাম ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখে।

2.  কলা ও দুধ একত্রে পেস্ট করে মুখে ও ঘাড়ে ১৫ মিনিট রেখেদিন। তারপরে পরিষ্কার ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। ত্বক মসৃন করতে কলার কোন জুড়ি নেই।

3. মধুর ঔষধি গুনের কথা কে না জানে। ত্বক উজ্জ্বল ও মসৃন করতেও মধু খুব কার্যকর। দই, মধু ও লেবুর রস একসাথে মিশিয়ে ২০ মিনিট ধরে মুখে লাগিয়ে রাখুন। এতকিছু হাতের কাছে না থাকলে শুধু মধুই ২০ মিনিট মুখে লাগিয়ে পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। নিয়মিত করলে কিছুদিন পরেই দেখতে পাবেন আপনার ত্বক আগের থেকে অনেক বেশী উজ্জ্বল হয়ে গেছে।

4. আলু বা টমেটো শুধু ভাল সবজীই নয় বরং এক একটা রং ফসর্াকারী এজেন্ট। আলু এবং টমেটো পেস্ট প্রতিদিন ব্যবহার করলে আপনি পাবেন দ্যুতিময় ত্বক।

5. মসুরের ডাল, দুধ লেবুর রস এবং চালের গুড়া একসাথে পেস্ট করলেই হয়ে যাবে সুন্দর ও কার্যকরী স্ক্রাব। সপ্তাহে তিন দিন ব্যাবহার করুন। আপনার ত্বক হবে আরো পরিষ্কার।

6.  ডিমের সাদা অংশ ও মধু একসাথে মিশিয়ে ২০ মিনিট মুখে মেখে রাখুন। তার পরে ধুয়ে ফেলুন। ত্বক উজ্জ্বল ও টান টান ভাব আনতে সাহায্য করবে এই ফরমুলা।

7. এক চামচ চিনির সাথে দুই চামচ লেবুর রস মিশিয়ে আলতো ভাবে মুখে ডলতে থাকুন যতক্ষন পর্যন্ত চিনি পুরোপুরি গলে না যায়। এমনকি পুরো শরীরেও লাগাতে পারেন।

8.  শিশুদের মত কোমল ও মসৃন ত্বক পেতে দুই চামচ চিনির মধ্যে তিন চামচ বেবী ওয়েল দিয়ে পেস্ট বানিয়ে মুখে নিয়মিত ব্যবহার করুন।

9. মুখে ব্রনের দাগ থাকলে কর্ণ-ফ্লাওয়ার এবং শসার মিশ্রন তৈরী করে প্রতিদিন মাখতে থাকুন।  ভাল ফল পাবেন।

10. পানি, ফলের রস, মাছ, সবুজ সবজী, ডিম রক্ত পরিষ্কার করে থাকে তাই এইগুলো পর্যাপ্ত পরিমানে খেতে হবে। ভাল ফল পাবেন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন